সুনামগঞ্জ , বুধবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৫ , ৩ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
হাসপাতাল চালুর দাবিতে মেডিকেল কলেজ শিক্ষার্থীদের অনির্দিষ্টকালের ক্লাস বর্জন বর্ণিল আয়োজনে বর্ষবরণ হাওরে চড়ক উৎসবে মানুষের ঢল ভারী বৃষ্টিপাতের আশঙ্কা, দ্রুত পাকা ধান কাটার আহ্বান বন্যার ঝুঁকিতে হাওরাঞ্চল তিন দপ্তরের ছুটি বাতিল গাজায় ইসরায়েলি বর্বরতায় নিহত বেড়ে ৫১ হাজার, নিখোঁজ ১১০০০ ধর্মপাশায় দুই আসামি গ্রেফতার বিএনপি’র ঈদ পুনর্মিলনী সরকারি জুবিলী উচ্চ বিদ্যালয়ে নববর্ষ উৎসব ডাকসু নির্বাচনের কমিশন গঠন মে মাসে এই সরকারকে ৫ বছর চাওয়ার কথা আমার নয়, জনগণের : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা সাগর-রুনি হত্যা তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের সময় পেছালো ১১৮ বার সুনামগঞ্জ শহরের শৃঙ্খলার জন্য অগ্নি স্নানে শুচি হোক ধরা নববর্ষের প্রত্যাশা, বিজন সেন রায় বোরো ধান কাটার ধুম, হাওরে বৈশাখী হাসি আমাদের পহেলা বৈশাখ ছাতকসহ দেশের ১০ অর্থনৈতিক অঞ্চলের পরিকল্পনা বাতিল ফিলিস্তিনে ইসরাইলি হামলার প্রতিবাদে জাতীয় পার্টির বিক্ষোভ

পরিবারের আক্ষেপ : ভাষা দিবসেও স্মরণ করা হয়না ভাষাসৈনিক দেওয়ান আজরফকে

  • আপলোড সময় : ২৪-০২-২০২৫ ১২:৫৩:৩৮ পূর্বাহ্ন
  • আপডেট সময় : ২৪-০২-২০২৫ ০১:০৬:৪২ পূর্বাহ্ন
পরিবারের আক্ষেপ : ভাষা দিবসেও স্মরণ করা হয়না ভাষাসৈনিক দেওয়ান আজরফকে
আশিস রহমান :: ভাষা আন্দোলনের প্রায় সাত দশক পেরিয়ে গেলেও দার্শনিক ও অধ্যাপক দেওয়ান মোহাম্মদ আজরফের স্মৃতি সংরক্ষণের কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। তাকে বায়ান্নর ভাষা আন্দোলনে অংশগ্রহণের কারণে সে সময় সুনামগঞ্জ কলেজের অধ্যক্ষ পদ থেকে অপসারণ করা হয়েছিল। সেই কলেজে তার নামে নেই কোনো স্মৃতিফলক। প্রতিবছর ভাষা দিবস এলেও তাকে স্মরণ করা হয় না। দোয়ারাবাজার উপজেলার পনাইল গ্রামে ১৯০৬ সালের ২৫ অক্টোবর তিনি জন্মগ্রহণ করেন। বাবা ছিলেন দোহালিয়ার জমিদার দেওয়ান মোহাম্মদ আসফ। মা রওশন হুসেইন বানু মরমি কবি দেওয়ান হাছন রাজা চৌধুরীর মেয়ে। ইতিহাস থেকে জানাযায়, ভাষা আন্দোলনের উত্তাল দিনগুলোয় দেওয়ান মোহাম্মদ আজরফ ছিলেন সিলেট থেকে রাজনীতিবিদ মাহমুদ আলী কর্তৃক প্রকাশিত ‘নওবেলাল’ পত্রিকার সম্পাদক। নওবেলাল পত্রিকায় গণপরিষদে রাষ্ট্র ভাষা প্রসঙ্গে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী লিয়াকত আলী খানের বক্তব্যসহ জিন্নাহর ঘোষণার তীব্র প্রতিবাদ করা হয়। এর ফলে সিলেটের উর্দুভাষী সমর্থক এক বৃহৎ জনগোষ্ঠী নওবেলাল তথা দেওয়ান মোহাম্মদ আজরফ এবং মাহমুদ আলীর ওপর ক্ষেপে যায়। উর্দুকে রাষ্ট্রভাষা করার প্রতিবাদে দেওয়ান মোহাম্মদ আজরফ ও মাহমুদ আলী সিলেটের তৎকালীন গোবিন্দ চরণ পার্কে প্রতিবাদ সভার আয়োজন করেন। সভায় উর্দু ভাষার সমর্থকরা মকসুদ আহমদকে মারধর করে। মানিক পীরের টিলাসংলগ্ন ‘নওবেলাল’ অফিসে উপস্থিত হয়ে উর্দু ভাষার সমর্থকরা মিছিল করে। এ সময় দেওয়ান মোহাম্মদ আজরফ বা মাহমুদ আলীর পক্ষে সিলেটে চলাফেরা করা ভীষণ সংকটজনক ছিল। প্রায়ই সংবাদ আসত তারা যেকোনো সময় আক্রান্ত হতে পারেন। তা সত্ত্বেও তারা বাংলা ভাষার পক্ষে আন্দোলন চালিয়ে যান। আমাদের রাষ্ট্রভাষা আন্দোলন সর্বপ্রথম শুরু করে যে সংগঠন তার নাম ‘তমদ্দুন মজলিস’। এই তমদ্দুন মজলিসের প্রতিষ্ঠাতাদের মধ্যে দেওয়ান মোহাম্মদ আজরফ ছিলেন অন্যতম। তিনি তমদ্দুন মজলিসের সভাপতিও ছিলেন। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে অসামান্য অবদানের জন্য বাংলাদেশ সরকার ১৯৯৩ সালের ৪ নভেম্বর তাকে জাতীয় অধ্যাপক পদ দেয়। ১৯৯৯ সালের ১ নভেম্বর ঢাকার একটি হাসপাতালে ইন্তেকাল করেন তিনি। পরে তাকে পনাইল গ্রামের পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়। দোয়ারাবাজার প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি কবি মুহাম্মদ হাবীবুল্লাহ হেলালী বলেন, দেওয়ান মোহাম্মদ আজরফ ভারতের আসাম ব্যবস্থাপনা পরিষদের সদস্য এবং পাকিস্তান জাতীয় পরিষদের সদস্যও ছিলেন। সারাজীবন নীরবে-নিভৃতে তিনি জ্ঞানের অন্বেষণ করেছেন। ওনার অপ্রকাশিত বইগুলো প্রকাশ করা উচিত। ওনার বর্ণাঢ্য জীবন ও কর্ম নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরা উচিত। ভাষাসৈনিক দেওয়ান মোহাম্মদ আজরফের মেয়ে লেখক ও প্রাবন্ধিক সাদিয়া চৌধুরী পরাগ বলেন, পাকিস্তান আন্দোলনের পর আমার বাবা রাজনীতি থেকে সরে আসেন। কারণ, তিনি মনে করতেন প্রচলিত রাজনীতিতে রাসুল (সা.)-এর আদর্শের ওপর পুরোপুরি টিকে থাকা যায় না। আজ পর্যন্ত কোনো সরকারই তার স্মৃতি সংরক্ষণে উদ্যোগ নেয়নি। তার জমানো টাকায় ঢাকার আবুজর গিফারী কলেজ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। সেখানেও তাকে স্মরণ করা হয়নি। আমি আমার বাবার স্মৃতি সংরক্ষণে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করার জন্য অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে জোর দাবি জানাই।

নিউজটি আপডেট করেছেন : SunamKantha

কমেন্ট বক্স